ঢাকা ০৪:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনাল ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উত্তেজনা, হাজার পুলিশ মোতায়েন

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৮:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১ ১৬৩ বার পড়া হয়েছে

১০ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিতব্য কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় মাইকিং করে জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে। জেলা সদরে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা।

ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মধ্যে সম্ভ্যব্য সহিংসতার আশঙ্কায় রোববার (১০ জুলাই) ভোর থেকে জেলাজুড়ে সহস্রাধিক পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পুরো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, গত মঙ্গলবার দুই দলের সমর্থকদের সংঘর্ষ ও এতে কয়েকজনের আহত হবার প্রেক্ষাপটে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলছেন, পুরো জেলার সবগুলো ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১১৬টি বিটেই এ ধরণের নির্দেশনা দিয়ে মাইকিং করছেন বিট কর্মকর্তারা। যেহেতু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছোট একটা ঘটনা ঘটে গেছে যেটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাই আমরা কোন সহিংসতার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছি না। তুচ্ছ ইস্যুতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ ধরণের রায়ট বা দাঙ্গা টিপিক্যাল বলেও উল্লেখ করছেন তিনি।

তিনি বলেন, ১১৬টি বিটের কর্মরত পুলিশ এবং চলমান লকডাউন উপলক্ষ্যে যে চল্লিশটি চেকপোস্ট ও টহলপার্টি আছে, এরা সবাই রোববার ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে খেলাকে ঘিরে কোন সহিংসতা যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে। সব মিলিয়ে পুলিশের হাজার খানেক সদস্য মোতায়েন থাকবে বলে জানান শাহীন।

স্থানীয়রা জানান, ব্রাক্ষণবাড়িয়াতে এর আগেও ছোট-খাট ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এবারের খেলা নিয়ে জেলা সদরেই সংঘর্ষ হয়েছে। তাই শহর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুলিশ মাইকিং করে যেসব নির্দেশনা দিচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে: ১. উন্মুক্ত স্থানে বড় পর্দায়, চায়ের দোকানে, হাট-বাজারে বসে খেলা দেখা যাবে না। প্রত্যেকে নিজ বাড়িতে বসে খেলা উপভোগ করবে।

২. খেলা পরবর্তী সময়ে কোন প্রকার আনন্দ মিছিল, হৈ-হুল্লোড় করা যাবে না।

৩. খেলাকে কেন্দ্র করে কেউ কোন উত্তেজনা ছড়াতে পারবে না

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীন বলেন, অনেক সমর্থকই ম্যাচ পরবর্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে নৌকা ভ্রমণ ও ভোজের আয়োজন করেছিল বলে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। এটা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। এমনিতেই লকডাউনের বিধিনিষেধের অংশ হিসেবে ঘরের বাইরে বের হওয়া ও কোথাও জড়ো হওয়ার ব্যাপারে বিধিনিষেধ রয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করা গেলেই ফুটবল ম্যাচকে ঘিরে কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি ঘটবে না বলে মনে করেন তারা।

এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খেলা নিয়ে সংঘর্ষের ইস্যুকে ঘিরে ফেসবুকে নানা ট্রল হচ্ছে। অনেকে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপাত্মক পোস্ট দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়া ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে সাধারণ ব্যবহারকারী – অনেকেই এ নিয়ে লিখছেন।

রওশন নিতুল নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমার একটাই ইচ্ছা করতেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোন এক বিশাল মাঠের (যেখানে সবাই মারামারি করার জন্য জড়ো হন, আছে অবশ্যই এমন জায়গা) আশেপাশে কোন গাছের উপর বসে ব্রাজিল আর্জেন্টিনা ফাইনাল দেখব। কি এক্সাইটিং। নিজ চোখে ইতিহাস দেখব ।ফাউলের বন্যা আর লাঠিসোঁটার দামামা।

ফেসবুকে করা এই পোস্টকে ‘সারকাজম’ উল্লেখ করেন রওশন নিতুল। তিনি বলেন, মানুষের উন্মাদনা। আর ব্রাজিলের এক জায়গার খেলা নিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া মারামারি হয়। এর চেয়ে সারকাস্টিক কি হতে পারে। সেটা আবার ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়াতেও আসে।

গত ৬ জুলাই কোপা আমেরিকায় ব্রাজিল বনাম পেরুর মধ্যকার সেমিফাইনাল খেলা শেষে ব্রাজিল ফুটবল দলের এক সমর্থকের সাথে আর্জেন্টিনার এক সমর্থকের কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাদের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে গেলে স্থানীয়রা তাদের নিবৃত্ত করেন। কিন্তু সকালের এই ঘটনার জেরে বিকেলে বড় আকারে সংঘর্ষ বেঁধে যায় দু দলের সমর্থকদের মধ্যে। এতে অন্তত ৫জন আহত হন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনাল ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উত্তেজনা, হাজার পুলিশ মোতায়েন

আপডেট সময় : ০৭:৪৮:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১

১০ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিতব্য কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় মাইকিং করে জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে। জেলা সদরে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা।

ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মধ্যে সম্ভ্যব্য সহিংসতার আশঙ্কায় রোববার (১০ জুলাই) ভোর থেকে জেলাজুড়ে সহস্রাধিক পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পুরো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, গত মঙ্গলবার দুই দলের সমর্থকদের সংঘর্ষ ও এতে কয়েকজনের আহত হবার প্রেক্ষাপটে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলছেন, পুরো জেলার সবগুলো ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১১৬টি বিটেই এ ধরণের নির্দেশনা দিয়ে মাইকিং করছেন বিট কর্মকর্তারা। যেহেতু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছোট একটা ঘটনা ঘটে গেছে যেটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাই আমরা কোন সহিংসতার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছি না। তুচ্ছ ইস্যুতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ ধরণের রায়ট বা দাঙ্গা টিপিক্যাল বলেও উল্লেখ করছেন তিনি।

তিনি বলেন, ১১৬টি বিটের কর্মরত পুলিশ এবং চলমান লকডাউন উপলক্ষ্যে যে চল্লিশটি চেকপোস্ট ও টহলপার্টি আছে, এরা সবাই রোববার ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে খেলাকে ঘিরে কোন সহিংসতা যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে। সব মিলিয়ে পুলিশের হাজার খানেক সদস্য মোতায়েন থাকবে বলে জানান শাহীন।

স্থানীয়রা জানান, ব্রাক্ষণবাড়িয়াতে এর আগেও ছোট-খাট ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এবারের খেলা নিয়ে জেলা সদরেই সংঘর্ষ হয়েছে। তাই শহর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুলিশ মাইকিং করে যেসব নির্দেশনা দিচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে: ১. উন্মুক্ত স্থানে বড় পর্দায়, চায়ের দোকানে, হাট-বাজারে বসে খেলা দেখা যাবে না। প্রত্যেকে নিজ বাড়িতে বসে খেলা উপভোগ করবে।

২. খেলা পরবর্তী সময়ে কোন প্রকার আনন্দ মিছিল, হৈ-হুল্লোড় করা যাবে না।

৩. খেলাকে কেন্দ্র করে কেউ কোন উত্তেজনা ছড়াতে পারবে না

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীন বলেন, অনেক সমর্থকই ম্যাচ পরবর্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে নৌকা ভ্রমণ ও ভোজের আয়োজন করেছিল বলে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। এটা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। এমনিতেই লকডাউনের বিধিনিষেধের অংশ হিসেবে ঘরের বাইরে বের হওয়া ও কোথাও জড়ো হওয়ার ব্যাপারে বিধিনিষেধ রয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করা গেলেই ফুটবল ম্যাচকে ঘিরে কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি ঘটবে না বলে মনে করেন তারা।

এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খেলা নিয়ে সংঘর্ষের ইস্যুকে ঘিরে ফেসবুকে নানা ট্রল হচ্ছে। অনেকে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপাত্মক পোস্ট দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়া ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে সাধারণ ব্যবহারকারী – অনেকেই এ নিয়ে লিখছেন।

রওশন নিতুল নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমার একটাই ইচ্ছা করতেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোন এক বিশাল মাঠের (যেখানে সবাই মারামারি করার জন্য জড়ো হন, আছে অবশ্যই এমন জায়গা) আশেপাশে কোন গাছের উপর বসে ব্রাজিল আর্জেন্টিনা ফাইনাল দেখব। কি এক্সাইটিং। নিজ চোখে ইতিহাস দেখব ।ফাউলের বন্যা আর লাঠিসোঁটার দামামা।

ফেসবুকে করা এই পোস্টকে ‘সারকাজম’ উল্লেখ করেন রওশন নিতুল। তিনি বলেন, মানুষের উন্মাদনা। আর ব্রাজিলের এক জায়গার খেলা নিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া মারামারি হয়। এর চেয়ে সারকাস্টিক কি হতে পারে। সেটা আবার ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়াতেও আসে।

গত ৬ জুলাই কোপা আমেরিকায় ব্রাজিল বনাম পেরুর মধ্যকার সেমিফাইনাল খেলা শেষে ব্রাজিল ফুটবল দলের এক সমর্থকের সাথে আর্জেন্টিনার এক সমর্থকের কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাদের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে গেলে স্থানীয়রা তাদের নিবৃত্ত করেন। কিন্তু সকালের এই ঘটনার জেরে বিকেলে বড় আকারে সংঘর্ষ বেঁধে যায় দু দলের সমর্থকদের মধ্যে। এতে অন্তত ৫জন আহত হন।