ঢাকা ১০:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ জুলাই ২০২৪, ৬ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় ঘুষি মেরে শিক্ষকের নাক ফাটালো সহকর্মীরা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০১:৪২:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ২৩২ বার পড়া হয়েছে

২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, আজকের মেঘনা ডটকম, কুমিল্লা সংবাদদাতা
: কুমিল্লার লালমাই সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয় তার অব্যাহতির দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একটি পক্ষ। এদিকে অধ্যক্ষ অনুসারী শিক্ষকরা কথা বলতে গেলে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা মামুনুর রশিদ নামে এক শিক্ষকের উপর হামলা চালায়। ঘুষিতে তার নাক ফেটে যায়। শনিবার জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, লালমাই সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তারের বিরুদ্ধে বাড়িভাড়া না দেয়াসহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে গত কয়েকদিন ধরে তার অব্যাহতি দাবি করে আসছিল শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ নিয়ে ওই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা অধ্যক্ষ এবং শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দুইপক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ে। শনিবার সকাল থেকে শিক্ষক পরিষদ ও কর্মচারীবৃন্দ ব্যানারে অধ্যক্ষের অব্যাহতি দাবি করে সাধারণ সম্পাদকের পক্ষের শিক্ষকরা কলেজের শ্রেণিকক্ষ, একাডেমিক ভবন ও অধ্যক্ষের কার্যালয়সহ প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে।
বেলা ১১টার দিকে অধ্যক্ষ ও তার পক্ষের শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে কথা বলতে গেলে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের হামলায় শিক্ষক মামুনুর রশিদ আহত হন।
কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জেসমীন আক্তার ¯œাতক (সম্মান) শিক্ষাকার্যক্রমে প্রথম সাময়িক অধিভ‚ক্তি সংক্রান্ত জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের একটি চিঠি জালিয়াতি করেছেন। এছাড়া তিনি পরীক্ষার ফরম পূরণের সম্মানী, বিশেষ ক্লাস, মডেল পরীক্ষা, সেমিস্টার, ইনকোর্স পরীক্ষা, ভর্তি বাবদ সম্মানীসহ নানা খাতে অনিয়ম করে দুই লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি সার্বিক সুযোগ-সুবিধা নিলেও আমাদের বাড়িভাড়া প্রদানসহ ন্যায্য দাবিগুলো মানছেন না। এ বিষয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেও প্রতিকার না পেয়ে কর্মসূচি পালন করছি। কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষক মামুনুর রশিদ বিরুপ মন্তব্য করায় কলেজের ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাকটর আবদুল মান্নান ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে কিল-ঘুষি মারেন, এতে তার নাকে-মুখে রক্ত ঝরে। তবে এ ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে আমরা মনে করি।
অধ্যক্ষ জেসমীন আক্তার বলেন, কলেজটি সবেমাত্র জাতীয়করণ করা হয়েছে। আমি ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের চিঠি জালিয়াতিসহ কিছু অভিযোগ আছে, যা আমার পূর্ববর্তী অধ্যক্ষের সময়ের হলেও তারা আমার উপর দায়ভার চাপিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া শিক্ষকদের বাড়িভাড়া পাওয়ার দাবি ন্যায্য, শিক্ষক হিসেবে এটি আমারও দাবি। তবে এ দাবি বাস্তবায়ন হবে সরকারি আদেশে। কিন্তু এক্ষেত্রে কতিপয় শিক্ষক আমাকে দায়ী করে আরও কিছু অভিযোগ তুলে আমার অব্যাহতি চেয়ে অবস্থান ধর্মঘট ও কর্মবিরতি পালন করছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে গ্রæপিং সৃষ্টি করে কলেজের সার্বিক কর্মকাÐ স্থবির করে দিয়েছে। তারা একজন শিক্ষককে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেছে।
ওই কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিয়া মোহাম্মাদ কেয়ামউদ্দিন বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। রবিবার কলেজে গিয়ে শিক্ষকদের সাথে বসে এসব বিষয়ে জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

কুমিল্লায় ঘুষি মেরে শিক্ষকের নাক ফাটালো সহকর্মীরা

আপডেট সময় : ০১:৪২:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০

২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, আজকের মেঘনা ডটকম, কুমিল্লা সংবাদদাতা
: কুমিল্লার লালমাই সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয় তার অব্যাহতির দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একটি পক্ষ। এদিকে অধ্যক্ষ অনুসারী শিক্ষকরা কথা বলতে গেলে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা মামুনুর রশিদ নামে এক শিক্ষকের উপর হামলা চালায়। ঘুষিতে তার নাক ফেটে যায়। শনিবার জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, লালমাই সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তারের বিরুদ্ধে বাড়িভাড়া না দেয়াসহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে গত কয়েকদিন ধরে তার অব্যাহতি দাবি করে আসছিল শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ নিয়ে ওই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা অধ্যক্ষ এবং শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দুইপক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ে। শনিবার সকাল থেকে শিক্ষক পরিষদ ও কর্মচারীবৃন্দ ব্যানারে অধ্যক্ষের অব্যাহতি দাবি করে সাধারণ সম্পাদকের পক্ষের শিক্ষকরা কলেজের শ্রেণিকক্ষ, একাডেমিক ভবন ও অধ্যক্ষের কার্যালয়সহ প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে।
বেলা ১১টার দিকে অধ্যক্ষ ও তার পক্ষের শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে কথা বলতে গেলে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের হামলায় শিক্ষক মামুনুর রশিদ আহত হন।
কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জেসমীন আক্তার ¯œাতক (সম্মান) শিক্ষাকার্যক্রমে প্রথম সাময়িক অধিভ‚ক্তি সংক্রান্ত জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের একটি চিঠি জালিয়াতি করেছেন। এছাড়া তিনি পরীক্ষার ফরম পূরণের সম্মানী, বিশেষ ক্লাস, মডেল পরীক্ষা, সেমিস্টার, ইনকোর্স পরীক্ষা, ভর্তি বাবদ সম্মানীসহ নানা খাতে অনিয়ম করে দুই লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি সার্বিক সুযোগ-সুবিধা নিলেও আমাদের বাড়িভাড়া প্রদানসহ ন্যায্য দাবিগুলো মানছেন না। এ বিষয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেও প্রতিকার না পেয়ে কর্মসূচি পালন করছি। কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষক মামুনুর রশিদ বিরুপ মন্তব্য করায় কলেজের ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাকটর আবদুল মান্নান ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে কিল-ঘুষি মারেন, এতে তার নাকে-মুখে রক্ত ঝরে। তবে এ ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে আমরা মনে করি।
অধ্যক্ষ জেসমীন আক্তার বলেন, কলেজটি সবেমাত্র জাতীয়করণ করা হয়েছে। আমি ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের চিঠি জালিয়াতিসহ কিছু অভিযোগ আছে, যা আমার পূর্ববর্তী অধ্যক্ষের সময়ের হলেও তারা আমার উপর দায়ভার চাপিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া শিক্ষকদের বাড়িভাড়া পাওয়ার দাবি ন্যায্য, শিক্ষক হিসেবে এটি আমারও দাবি। তবে এ দাবি বাস্তবায়ন হবে সরকারি আদেশে। কিন্তু এক্ষেত্রে কতিপয় শিক্ষক আমাকে দায়ী করে আরও কিছু অভিযোগ তুলে আমার অব্যাহতি চেয়ে অবস্থান ধর্মঘট ও কর্মবিরতি পালন করছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে গ্রæপিং সৃষ্টি করে কলেজের সার্বিক কর্মকাÐ স্থবির করে দিয়েছে। তারা একজন শিক্ষককে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেছে।
ওই কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিয়া মোহাম্মাদ কেয়ামউদ্দিন বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। রবিবার কলেজে গিয়ে শিক্ষকদের সাথে বসে এসব বিষয়ে জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।