ঢাকা ০৪:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজয়ের পথে আজারবাইজান, দাবি প্রেসিডেন্টের

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ১০:৫৯:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর ২০২০ ১৬৭ বার পড়া হয়েছে

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ হুঁশিয়ার করে বলেছেন, আর্মেনিয়ার সেনারা ভুল পথে হাঁটছে। অন্যান্য দেশের সহযোগিতা না পেলে আমাদের সেনাবাহিনীর সামনে টিকে থাকার কোনো শক্তিই তাদের নেই।

সোমবার তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমরা প্রতিদিনই বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আর নিজ ভূমি শত্রুমুক্ত করতে যা কিছু করতে হয়, তাই করছে আমাদের সেনারা।

এদিন আবারও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে সংঘাত চালিয়ে গেছে আজারবাইজার আর আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দ্বিতীয়বারের মতো দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর হামলা-পাল্টা হামলা চালিয়ে যায় দুই দেশের সেনারা।

এতে হতাহত হয় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন সেনা। যুদ্ধবিরতি না মেনে আজারবাইজানের গোরানবয়, তেরতের, আঘজাবেদি এবং আঘদাম এলাকায় আর্মেনিয়ার সেনারা রাতভর বোমা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। পরে আজেরি সেনারাও হামলার জবাব দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, এদিন নতুন করে আর্মেনিয়ার অধীনে থাকা ১৩টি নতুন অঞ্চল দখলমুক্ত করেছে আজেরি সেনারা।

এদিকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আর্মেনিয়ার চালানো হামলায় বিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে আজারবাইজানের গানজা নগরী। সব হারানোর বেদনা নিয়ে এখন দু’চোখে অন্ধকার দেখছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা বলছেন, বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটাও চোখের সামনে ধুলোয় মিশে গেলো। আমার আর কেউ নেই, কোন আশ্রয় নেই। যে ক’দিনই বাঁচি না কেন, কোথায় কিভাবে জীবন কাটবে আর জানা নেই।

‘আমাদের এখানকার মানুষ যথেষ্ট মানবিক। তার অর্থ এই নয় যে আর্মেনিয়ার কাছে পরাজয় মেনে নিবো। আমাদের সেনারা শত্রুর কাছ থেকে কারাবাখ পুনরুদ্ধার করবেই।’

তবে আর্মেনিয়া নিয়ন্ত্রিত কারাবাখ কর্তৃপক্ষ বলছে, আজেরি সেনারাই যুদ্ধবিরতি উপেক্ষা করে মার্তুনি শহর আর এর আশপাশের চারটি গ্রামে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে। আর তা প্রতিহত করতেই পাল্টা হামলা চালায় তাদের সেনাবাহিনী।

যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পরও তা অমান্য করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘটনা কোনভাবেই গ্রহণযোহগ্য না বলে মন্তব্য করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

বলেন, মস্কোর বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো, তার কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এখনও বেসামরিক মানুষের বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। এটা কোনভাবেই চলতে পারে না। আমাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ বিষয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছেন। আশা করি, শিগগিরি ভালো কোন ফলাফল মিলবে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে জরুরি বলে উল্লেখ করে, ত্রাণ বিতরণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও যুদ্ধবিরতি কার্যকরের তাগিদা দিয়েছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা রেড ক্রস।

২৭ অক্টোবর আজারবাইজানের বসতি এবং সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায় আর্মেনিয়া। তারপরই দু’পক্ষের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। দু’পক্ষের সম্মতিতে ১০ অক্টোবর প্রথম যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। অল্প কিছুক্ষণ পরই তা লঙ্ঘন করে আজারবাইজানের ভূখণ্ডে হামলা চালায় আর্মেনিয়া। দ্বিতীয় দফায় কার্যকর হওয়া মানবিক যুদ্ধবিরতিও লঙ্ঘন করে রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত দখলদার আর্মেনিয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

ট্যাগস :

বিজয়ের পথে আজারবাইজান, দাবি প্রেসিডেন্টের

আপডেট সময় : ১০:৫৯:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর ২০২০

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ হুঁশিয়ার করে বলেছেন, আর্মেনিয়ার সেনারা ভুল পথে হাঁটছে। অন্যান্য দেশের সহযোগিতা না পেলে আমাদের সেনাবাহিনীর সামনে টিকে থাকার কোনো শক্তিই তাদের নেই।

সোমবার তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমরা প্রতিদিনই বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আর নিজ ভূমি শত্রুমুক্ত করতে যা কিছু করতে হয়, তাই করছে আমাদের সেনারা।

এদিন আবারও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে সংঘাত চালিয়ে গেছে আজারবাইজার আর আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দ্বিতীয়বারের মতো দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর হামলা-পাল্টা হামলা চালিয়ে যায় দুই দেশের সেনারা।

এতে হতাহত হয় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন সেনা। যুদ্ধবিরতি না মেনে আজারবাইজানের গোরানবয়, তেরতের, আঘজাবেদি এবং আঘদাম এলাকায় আর্মেনিয়ার সেনারা রাতভর বোমা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। পরে আজেরি সেনারাও হামলার জবাব দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, এদিন নতুন করে আর্মেনিয়ার অধীনে থাকা ১৩টি নতুন অঞ্চল দখলমুক্ত করেছে আজেরি সেনারা।

এদিকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আর্মেনিয়ার চালানো হামলায় বিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে আজারবাইজানের গানজা নগরী। সব হারানোর বেদনা নিয়ে এখন দু’চোখে অন্ধকার দেখছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা বলছেন, বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটাও চোখের সামনে ধুলোয় মিশে গেলো। আমার আর কেউ নেই, কোন আশ্রয় নেই। যে ক’দিনই বাঁচি না কেন, কোথায় কিভাবে জীবন কাটবে আর জানা নেই।

‘আমাদের এখানকার মানুষ যথেষ্ট মানবিক। তার অর্থ এই নয় যে আর্মেনিয়ার কাছে পরাজয় মেনে নিবো। আমাদের সেনারা শত্রুর কাছ থেকে কারাবাখ পুনরুদ্ধার করবেই।’

তবে আর্মেনিয়া নিয়ন্ত্রিত কারাবাখ কর্তৃপক্ষ বলছে, আজেরি সেনারাই যুদ্ধবিরতি উপেক্ষা করে মার্তুনি শহর আর এর আশপাশের চারটি গ্রামে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে। আর তা প্রতিহত করতেই পাল্টা হামলা চালায় তাদের সেনাবাহিনী।

যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পরও তা অমান্য করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘটনা কোনভাবেই গ্রহণযোহগ্য না বলে মন্তব্য করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

বলেন, মস্কোর বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো, তার কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এখনও বেসামরিক মানুষের বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। এটা কোনভাবেই চলতে পারে না। আমাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ বিষয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছেন। আশা করি, শিগগিরি ভালো কোন ফলাফল মিলবে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে জরুরি বলে উল্লেখ করে, ত্রাণ বিতরণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও যুদ্ধবিরতি কার্যকরের তাগিদা দিয়েছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা রেড ক্রস।

২৭ অক্টোবর আজারবাইজানের বসতি এবং সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায় আর্মেনিয়া। তারপরই দু’পক্ষের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। দু’পক্ষের সম্মতিতে ১০ অক্টোবর প্রথম যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। অল্প কিছুক্ষণ পরই তা লঙ্ঘন করে আজারবাইজানের ভূখণ্ডে হামলা চালায় আর্মেনিয়া। দ্বিতীয় দফায় কার্যকর হওয়া মানবিক যুদ্ধবিরতিও লঙ্ঘন করে রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত দখলদার আর্মেনিয়া।